মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৪৯ অপরাহ্ন

**সুইস ব্যাঙ্কে বাংলাদেশের আমানত: একটি ঘনিষ্ঠ নজর**

প্রতিনিধির নাম / ১৯৯ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২২ জুন, ২০২৩

সুইজারল্যান্ড বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য এবং বাংলাদেশীরাও এর ব্যতিক্রম নয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকা জমার প্রবণতা বাড়ছে। তবে, 2022 সালে, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানত একটি বিস্ময়করভাবে 94% হ্রাস পেয়েছে। এই দরপতনের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এর প্রভাবের পাশাপাশি দরপতনের কারণ নিয়েও বেশ কিছু প্রশ্ন উঠেছে।

**পতনের কারণ**

সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানত কমে যাওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। একটি কারণ হলো বাংলাদেশে চলমান মুদ্রা সংকট। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সুইস ফ্রাঙ্কের বিপরীতে বাংলাদেশি টাকার ক্রমাগত অবমূল্যায়ন হচ্ছে, যার ফলে বাংলাদেশিদের জন্য সুইস ব্যাংকে টাকা জমা করা কম আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।

আরেকটি কারণ হল বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্ব অর্থনীতি মন্থর হয়ে পড়েছে এবং এর ফলে বাংলাদেশের মতো উদীয়মান বাজারে বিনিয়োগ হ্রাস পেয়েছে। এটি বাংলাদেশী ব্যবসার জন্য মূলধন সংগ্রহ করা আরও কঠিন করে তুলেছে এবং এর ফলে কিছু ব্যবসা সুইস ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে বাধ্য হয়েছে।

অবশেষে সুইস ব্যাংকে অর্থ পাচার নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, সুইস ব্যাঙ্কগুলির সাথে জড়িত অর্থ পাচারের বেশ কয়েকটি হাই-প্রোফাইল মামলা হয়েছে। এর ফলে সুইস ব্যাঙ্কগুলির উপর যাচাই-বাছাই বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কিছু বাংলাদেশী অর্থ পাচারের তদন্তের ভয়ে সুইস ব্যাঙ্কে টাকা জমা দিতে অনিচ্ছুক হতে পারে।

**বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রভাব**

সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানত কমে যাওয়া বাংলাদেশি অর্থনীতিতে বেশ কিছু প্রভাব ফেলছে। প্রথমত, এটি বাংলাদেশ সরকারের কাছে উপলব্ধ বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ হ্রাস করে। এটি সরকারের জন্য তার বাজেট ঘাটতিকে অর্থায়ন করা আরও কঠিন করে তুলতে পারে এবং এটি বাংলাদেশী টাকার অবমূল্যায়নের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

দ্বিতীয়ত, আমানতের হ্রাস বাংলাদেশী ব্যবসার জন্য মূলধন সংগ্রহ করা আরও কঠিন করে তুলতে পারে। এটি অর্থনৈতিক বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে, এবং এটি চাকরি হারাতে পারে।

তৃতীয়ত, আমানতের হ্রাস বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশের সুনামকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এটি ভবিষ্যতে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা বাংলাদেশের জন্য আরও কঠিন করে তুলতে পারে।

**উপসংহার**

সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানতের হ্রাস একটি গুরুতর সমস্যা যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অনেক প্রভাব ফেলে। সরকারকে পতনের কারণগুলি মোকাবেলা করার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে এবং বাংলাদেশী অর্থনীতিতে আস্থা ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ নিতে হবে।

**উপরে উল্লিখিত কারণগুলি ছাড়াও, সুইস ব্যাঙ্কগুলিতে বাংলাদেশিদের আমানত হ্রাসের জন্য আরও কয়েকটি কারণ অবদান রাখতে পারে। এই কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:**

* বিশ্বজুড়ে নিয়ন্ত্রকদের দ্বারা সুইস ব্যাংকের ক্রমবর্ধমান তদন্ত।
* সুইজারল্যান্ডে নতুন প্রবিধানের প্রবর্তন যা ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের জন্য বেনামে সুইস ব্যাঙ্কে অর্থ জমা করা আরও কঠিন করে তোলে।
* বিদেশী বিনিয়োগের গন্তব্য হিসাবে সিঙ্গাপুর এবং হংকং-এর মতো অন্যান্য আর্থিক কেন্দ্রগুলির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা।

**এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে সুইস ব্যাঙ্কে বাংলাদেশিদের জমার পরিমাণ কমে যাওয়ার মানে এই নয় যে বাংলাদেশীরা সুইজারল্যান্ড থেকে পুরোপুরি অর্থ তুলে নিচ্ছে। এটা সম্ভব যে কিছু বাংলাদেশী তাদের অর্থ অন্য আর্থিক কেন্দ্রে স্থানান্তর করছে। যাইহোক, আমানতের হ্রাস এখনও উদ্বেগের কারণ, এবং এটি এমন কিছু যা বাংলাদেশ সরকারের গুরুত্ব সহকারে নেওয়া দরকার।**

**সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানতের হ্রাস মোকাবেলায় সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে পারে। এই পদক্ষেপগুলি অন্তর্ভুক্ত:**

* বাংলাদেশী আর্থিক ব্যবস্থার স্বচ্ছতা উন্নত করা।
* নতুন প্রবিধান প্রবর্তন যা বাংলাদেশী আর্থিক ব্যবস্থার মাধ্যমে ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের জন্য অর্থ পাচার করা আরও কঠিন করে তোলে।
* বাংলাদেশকে বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে উন্নীত করা।

**আমানত হ্রাসে অবদান রাখা অন্তর্নিহিত অর্থনৈতিক সমস্যাগুলি মোকাবেলায় সরকারকেও কাজ করতে হবে। এই সমস্যাগুলির মধ্যে রয়েছে মুদ্রার সংকট, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা এবং বিশ্বজুড়ে নিয়ন্ত্রকদের দ্বারা সুইস ব্যাঙ্কের ক্রমবর্ধমান তদন্ত।**

**সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানতের হ্রাস একটি গুরুতর সমস্যা, তবে এটি অনতিক্রম্য নয়। সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে, সরকার পতনের জন্য অবদান রাখার কারণগুলিকে মোকাবেলা করতে পারে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারে।**

Facebook Comments Box


এ জাতীয় আরো সংবাদ

Archives