বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ, এর ভূখণ্ডের মধ্য দিয়ে ২৩০টিরও বেশি নদী প্রবাহিত। এই নদীগুলি দেশের অর্থনীতি এবং বাস্তুসংস্থানের জন্য অত্যাবশ্যক, পানীয় জল, সেচ, পরিবহন এবং বিভিন্ন ধরণের বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল প্রদান করে।
লাখ লাখ বাংলাদেশীর আয়েরও প্রধান উৎস নদীগুলো। মাছ ধরা, শিপিং, এবং পর্যটন সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ শিল্প যা নদীগুলির উপর নির্ভর করে। উপরন্তু, নদীগুলি দেশের জনসংখ্যার জন্য খাদ্যের একটি মূল্যবান উৎস প্রদান করে।
যাইহোক, নদীগুলি দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বন উজাড় সহ বিভিন্ন কারণের জন্য হুমকির মধ্যে রয়েছে। শিল্প ও কৃষি বর্জ্য থেকে দূষণ একটি বড় সমস্যা, এবং এটি নদীগুলিকে ক্রমশ দূষিত করে তুলছে। জলবায়ু পরিবর্তন নদীগুলির উপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, কারণ এটি সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং ঝড়ের তীব্রতা সৃষ্টি করছে। বন উজাড় করাও একটি সমস্যা, কারণ এটি নদীগুলিকে তাদের প্রাকৃতিক প্লাবনভূমি হারিয়ে ফেলছে।
বাংলাদেশ সরকার নদীগুলোর হুমকির বিষয়ে সচেতন এবং সেগুলো মোকাবেলায় পদক্ষেপ নিচ্ছে। নদী রক্ষার জন্য সরকার বেশ কিছু আইন প্রণয়ন করেছে এবং বর্জ্য পরিশোধন সুবিধার উন্নয়নে কাজ করছে। সরকার গাছ লাগানো এবং নদীর প্রাকৃতিক প্লাবনভূমি পুনরুদ্ধারের জন্যও কাজ করছে।
তবে নদী রক্ষায় আরও কিছু করতে হবে। সরকারকে নদী সুরক্ষা কর্মসূচির জন্য তহবিল বাড়াতে হবে এবং দূষণ কমাতে ব্যবসা ও সম্প্রদায়ের সাথে কাজ করতে হবে। নদীগুলির গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে সরকারকেও কাজ করতে হবে এবং তাদের রক্ষার জন্য পদক্ষেপ নিতে জনগণকে উত্সাহিত করতে হবে।
বাংলাদেশের নদীগুলো দেশের অর্থনীতি ও বাস্তুসংস্থানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তারা লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য একটি লাইফলাইন প্রদান করে, এবং তারা একটি প্রধান পর্যটক আকর্ষণ। তবে বিভিন্ন কারণে নদীগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। বাংলাদেশ সরকার এই হুমকি মোকাবেলায় পদক্ষেপ নিচ্ছে, তবে আরও কিছু করা দরকার। বাংলাদেশের নদীগুলি সংরক্ষণের যোগ্য, এবং তাদের রক্ষা করার জন্য আমাদের অংশ নেওয়া আমাদের সকলের ব্যাপার।
সরকারের প্রচেষ্টার পাশাপাশি বাংলাদেশের নদ-নদী রক্ষায় বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) কাজ করছে। এই এনজিওগুলি নদীগুলির মুখোমুখি হুমকি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে এবং তারা এই সমস্যার টেকসই সমাধান বিকাশের জন্য কাজ করছে।
বাংলাদেশের নদী রক্ষায় কাজ করে এমন একটি এনজিওর উদাহরণ হল বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। BAPA একটি অলাভজনক সংস্থা যা 30 বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে পরিবেশ রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। BAPA দূষণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি নেতৃস্থানীয় কণ্ঠস্বর হয়েছে, এবং এটি নদীগুলির মুখোমুখি সমস্যার টেকসই সমাধান বিকাশে কাজ করেছে।
বাংলাদেশের নদী রক্ষায় কাজ করা একটি এনজিওর আরেকটি উদাহরণ হল রিভারাইন পিপলস ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক (RPDNA)। RPDNA হল একটি অলাভজনক সংস্থা যা বাংলাদেশের নদী তীরবর্তী মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়নে কাজ করে। RPDNA নদীগুলির মুখোমুখি হুমকির বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে, এবং এই সমস্যাগুলির টেকসই সমাধান বিকাশে কাজ করেছে।
বাংলাদেশের নদী রক্ষায় এসব এনজিওর কাজ অপরিহার্য। বাংলাদেশ সরকার তার ভূমিকা পালন করছে, কিন্তু প্রকৃত পরিবর্তন আনতে এনজিও এবং জনগণের সমর্থন প্রয়োজন। বাংলাদেশের নদী রক্ষায় আমাদের সবার ভূমিকা আছে।